একটা সময় আলো থেকে অন্ধকারের পথে পা বাড়ালেও বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান ধরা হয় মোহাম্মদ আশরাফুলকেই। সন্দেহ নেই ব্যাটিং স্বত্তায় দেশের অন্য সবার চেয়ে এগিয়েই থাকবেন আশরাফুল। এ তালিকায় উঠে আসে মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রহীমের নামও।
তবে তার আগে দেশের টেস্ট স্ট্যাটাস পূর্ববর্তী সময় নব্বইয়ের দশকের শেষদিকে (মিনহাজুল আবেদিন নান্নুদের পরপর) দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান ধরা হতো আল শাহরিয়ার রোকনকে।
এটি দেখে বর্তমান প্রজন্মের ক্রিকেট ভক্ত-সমর্থকরা হয়তো ভ্রু কুচকে উঠবেন। ভাববেন এ রোকন আবার কে? কখনো তো সেঞ্চুরি বা রেকর্ডে নাম দেখলাম না। সে আবার কেমন ক্রিকেটার?- এমন ধারণা করা অমূলক নয়। কেননা রোকনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পরিসংখ্যান খুব বেশি ভালো নয়।
টেস্টে ২৩ গড়ে ৬৮৩ রান, ওয়ানডে ১৪ গড়ে ৩৭৪ রান। বর্তমান সময়ের হিসেবে যা খুবই সাদামাটা। তবে সত্যের পেছনের সত্য হলো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তেমনভাবে নিজেকে চেনাতে না পারলেও দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে সবচেয়ে পরিণত এবং ‘কমপ্লিট’ ব্যাটসম্যানই ধরা হতো তাকে।
কেননা একজন ব্যাটসম্যানের যেসব শটস থাকা দরকার, তার সবই খেলতে পারতেন রোকন। অবলীল ড্রাইভ, কাট, পুল কিংবা ফ্লিক খেলতেন। সবচেয়ে বেশি পছন্দ করতেন ফ্লিক করতে। এই ফ্লিক খেলতে গিয়েই ক্যারিয়ারের অনেক সম্ভাবনাময় ইনিংসের অপমৃত্যু ঘটেছে তার।
বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রথম টেস্টের একাদশেও ছিলেন রোকন। যেখানে তার সতীর্থ ছিলেন খালেদ মাসুদ পাইলট। পরে মাশরাফি বিন মর্তুজার সঙ্গেও বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছেন বর্তমান নিউজিল্যান্ডে স্থায়ী হওয়া রোকন। ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে তারা তিনজনই ছিলেন টিম বাংলাদেশের নিয়মিত সদস্য।
বেশ কয়েকবছর আগেই তিনি চলে গিয়েছেন নিউজিল্যান্ডে। বসবাস করেন নেপিয়ার শহর থেকে খানিকদূরে একটি কান্ট্রিসাইডে। দেশ থেকে চলে গেলেও ছাড়তে পারেন না দেশের টান। তাই যখনই বাংলাদেশ দল নিউজিল্যান্ড সফরে যায় ছায়াসঙ্গী হিসেবে সেখানে থাকেন রোকনও।
যার ব্যতিক্রম ঘটলো না এবারও। তিনটি করে ওয়ানডে-টেস্ট খেলতে বাংলাদেশ দল বর্তমানে অবস্থান করছে নিউজিল্যান্ডে। ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচটি হবে নেপিয়ারে, রোকনের বাসস্থানের খুব কাছে।